মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন

বান্দরবানে শিশু ধর্ষণ মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

বান্দরবান প্রতিনিধি:: বান্দরবানে শিশুকে ধর্ষণের (বলাৎকার) মামলায় শরিফুল ইসলাম (২০) নামে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেন। একই সাথে আসামিকে ৫০ হাজার এক টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দিয়েছেন।

বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান সিদ্দিক সোমবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ রায় ঘোষণা করেন।

মামলায় মোট ১১ জনের সাক্ষ্য, মেডিকেল রিপোর্ট ও শরিফুলের ডাক্তারি পরীক্ষা ও তার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী পর্যালোচনা করে শরিফুল ইসলাম কর্তৃক শিশু ধর্ষণ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাইব্যুনাল এ রায় দেন।

বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট বাসিং থোয়াই মারমা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, কারাদন্ডপ্রাপ্ত আসামী মো. শরিফুল ইসলাম বান্দরবান জেলার আলীকদম উপজেলার চৈক্ষং ইউনিয়নের সিরাজ কারবারি পাড়ার নুরুল ইসলাম ফকির এর ছেলে। সোমবার মামলার রায় ঘোষণার সময় আসামি শরিফুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাঁকে বান্দরবান কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেপ্তারের পর থেকে শরিফুল এ কারাগারেই আছেন।

বিজ্ঞ বিচারক রায়ে বলেন, রায় ঘোষণার আগ থেকে আসামি শরিফুল যে কয়দিন কারাগারে আছেন সেটা যাবজ্জীবনের হিসাব থেকে বাদ যাবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের ১২/২০২০ ও জিআর-২৮৮/২০১৯ মামলায় এ রায় দেয়া হয়।

মামলা সূত্রে আরও জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট বিকেলে তিন বছরের ছেলে শিশু (মো. জিয়াবুল) নিজ বাড়ির পেছনে খেলা করার সময় আসামি শরিফুল ওই শিশুকে ফুসলিয়ে পার্শ্ববর্তী নির্মাণাধীন কক্ষে নিয়ে জোরপূর্বক পায়ুপথ দিয়ে ধর্ষণ (বলাৎকার) করেন। ধর্ষণের পর আসামি শরিফুল পালিয়ে যাওয়ার সময় ওই শিশু (জিয়াবুল) এর মা রোকেয়া বেগম দেখে ফেলেন। পরে ওই শিশু মাকে বিস্তারিত বলেন। পরে আসামি শরিফুল গত ০৩/০৯/২০১৯ তারিখ দিবাগত রাতে নিজ বাড়িতে আসারপর স্থানীয়দের সহায়তায় আলীকদম থানা পুলিশ শরিফুলকে আটক করে। ধর্ষণের শিকার শিশুর পিতা মো. জিয়াউর রহমান বাদি হয়ে আলীকদম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শরিফুল ইসলামকে আসামি করে মামলা করেন। পরে পুলিশ আটক শরিফুলকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে বান্দরবান কারাগারে প্রেণ করা হয়। সেই থেকে শরিফুল কারাগারেই রয়েছে।

এর আগে তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম সরেজমিন পরিদর্শন ও সংশ্লিষ্ট ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ ও যাবতীয় তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়ে ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর বান্দরবান নারী ও শিশু নির্যাতন দন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ পত্র (চার্জশীট) দাখিল করেন।

এদিকে রায় ঘোষণার পর বাদি ও শিশু পুত্রের পিতা জিয়াউর রহমান উপস্থিত ছিলেন না। তবে স্পেশাল পিপি বাসিং থোয়াই মারমা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি আসামীর যাবজ্জীবন সাজা যেন বহাল থাকে সে প্রত্যাশা করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com